Constitution

ভূমিকাঃ-
প্রাগৈতিহাসিকভাবেই বাংলাদেশ সনাতন হিন্দু ধর্মের একটি পবিত্র তীর্থ ভূমি। এই ভূমিতে ভগবান শ্রী রাম চন্দ্র পদার্পন করেছেন সীতা মাতাজি আর লক্ষণকে নিয়ে । এই ভূমিতে মহামায়া সতী’র পবিত্র দেহ খন্ডাংশ রয়েছে। এখানেই নশ্বর দেহ ত্যাগ করেছেন পরম ব্র্হ্মচার্য বাবা লোকনাথ। পদচিহ্ন রয়েছে অগুনিত দেবতা, সন্নাসী আর পূন্যার্থীদের। শতাব্দির পর শতাব্দি বঙ্গ, বাঙলা বা বাংলাদেশ যে নামেই এই পবিত্র পাটি পরিচিত হোকনা কেনো একদা এখানে শুধুমাত্র সনাতন হিন্দু ধর্মীয় মানুষই বসবাস করতো। অন্য কোনো জাতি গোষ্ঠি বা ধর্মের লোক ছিলনা। কালের আবর্তে বর্ণ বৈষম্য আর সামাজিক নানা ঘাত-প্রতিঘাতে সেই সব সনাতন হিন্দুদের অনেকে বৌদ্ধ, খ্রিস্টান এবং ইসলামসহ বিভিন্ন ধর্ম গ্রহন করে। ভূ-রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের ইতিহাস এমন যে, এই দেশ বা মাটিতে সনাতন হিন্দুরা এখন সংখ্যালঘু। দিন যত যাচ্ছে ততই বিলুপ্ত প্রায় হতে চলেছে এই দেশের হিন্দু ভূমি পুত্ররা । কিছুটা কমলেও সনাতন হিন্দুদের মধ্যে এখনো রয়েছে বর্ণবাদ, হিংসা এবং অনৈক্য । নিজেদের মধ্যে ঐক্য না থাকায় বিধর্মীদের দ্বারা প্রতিনিয়ত হচ্ছে নির্যাতনের

শিকার । আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে হচ্ছে বিপর্যস্ত। নিরুপায় হয়ে উঠেছে ধর্ম পালনে। প্রতিনিয়ত কোনো না ভাবে নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন হিন্দুরা। হিন্দু মা বোনরা ধর্ষনের শিকার হচ্ছেন, খুন, অপহরন হচ্ছেন, শ্লীলতাহানির শিকার হচ্ছেন। হিন্দু ভাইদের ব্যবসা বাণিজ্য প্রতিষ্ঠান দখল, লুটপাট ভাংচুর হচ্ছে, নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন তারা। মন্দির, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান এবং হিন্দুদের ঘর বাড়ি ভাংচুর, লুটপাট হচ্ছে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। জবরদখল করা হচ্ছে, ধর্মীয় ও দেবোত্তর সম্পত্তি-সম্পদ। মৌলিক- মানবিক অধিকার রক্ষায় সনাতন হিন্দুদের প্রতিবাদ করারও সাহস হারিয়ে যাচ্ছে দিনকে দিন। এই অবস্থার পরিবর্তন আনতেই সৃষ্টি হয়েছে বিশ্ব হিন্দু ফেডারেশন, বাংলাদেশ। যার মূল এবং প্রধান লক্ষ্যই হচ্ছে সনাতন হিন্দুদের মধ্যে ঐক্য গড়ে তোলা। হিন্দুরা যাতে বর্তমান এবং ভবিষ্যতে সুন্দরভাবে বাংলাদেশে বসবাস করতে পারে সেই লক্ষ্যে তাদের মৌলিক সমস্যাগুলো নিয়ে গবেষণা করবা, সমস্যা চিহ্নিতকরা এবং সমাধানে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া। এছাড়া অন্যতম কাজ হচ্ছে সনাতন হিন্দু ধর্মের মানুষের আত্মরক্ষা, নির্বিঘ্নে ধর্ম প্রতিপালন এবং মানবাধিকার রক্ষায় জনসচেতনতা সৃষ্টির মধ্য দিয়ে জনকল্যানমূলক কাজ করা। ঐক্য, সম্প্রতি, শৃঙ্খলা এবং প্রগতি সংগঠনটির মূল মন্ত্র। বিশ্ব হিন্দু ফেডারেশনর

ভিত্তি হচ্ছে, এটা একটি সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।

ধারা নং- ০১
(ক) সংগঠনের নামঃ-
বাংলায় : বিশ্ব হিন্দু ফেডারেশন, বাংলাদেশ
ইংরেজীতে :World Hindu Federation,Bangladesh

(খ) সংগঠনের সংক্ষিপ্ত নামঃ-
বাংলায় : হিন্দু ফেডারেশন
ইংরেজীতে : Hindu Federation
বাংলায় সংক্ষেপন : ডব্লিউএইচএফ
ইংরেজিতে সংক্ষেপন : WHF

(গ) শ্লোগান “ যত মত হোক হিন্দু সবাই – জনকল্যানে ঐক্য চাই ” ।

(ঘ) সংগঠনের পতাকাঃ- পতাকার জমিন হবে লম্বালম্বি লাল, সবুজ এবং গেরুয়া, এই তিনটি রংয়ের। মাঝখানে সাদা রংয়ের বৃত্ত থাকবে। সাদা বৃত্তের মধ্যে থাকবে সংগঠনের লোগো। মাপ = দৈর্ঘ ১০ ফুট, প্রস্ত ৬ ফুট। অর্থাৎ ১০:৬ ফুট। সাদা রংয়ের বৃত্তটি হবে ২ ফুট ব্যাসার্ধের। বৃত্তের ব্যাসার্ধের কেন্দ্র হবে দৈর্ঘ্য দিকে ৪.৫ ফুট এবং প্রস্তের দিকে ৩ ফুটের মাঝামাঝি স্থানে। আনুপাতিক হারে বড় ও ছোট পতাকা তৈরি করা যাবে। পতাকার লাল রং ঐক্যের প্রতীক, সবুজ রং সম্প্রীতির প্রতীক, গেরুয়া রং প্রগতির প্রতীক এবং সাদা রং শান্তি/শৃঙ্খলার প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হবে।

(ঙ) সংগঠনের ধ্বনি‍ঃ- ওম নম: শিবায়া: ওম শান্তি : ওম: ।

(চ) সংগঠনের লোগো : ভগবান বিষ্ণুর সুদর্শন চক্র এবং ভগবান শিবের ত্রিশূল সমন্বিত গোলাকার চক্র। মাঝখানে ওম: শব্দাক্ষর দ্বারা চক্রটি আবদ্ধ। চক্রের মাঠামোতে, বিশ্ব হিন্দু ফেডারেশন, বাংলাদেশ, বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় লিপিবদ্ধ। সংগঠনটির নামের সংক্ষেপন, প্রতিষ্ঠার সময় ও তারিখ উল্লেখিত। ঊর্ধাংশে ত্রিশূলের ফলারের নিচে “জয় মা দুর্গা” লিপিবদ্ধ করা। “ বিশ্ব হিন্দু ফেডারেশন” এর লোগোর বর্ণনা

সুদর্শন চক্র : লোগোর গোল চক্রটি হচ্ছে হিন্দু দেবতা বিষ্ণুর শুভ ও শান্তির নিদর্শন সুদর্শন চক্র। বিষ্ণুর তিন হাতে শঙ্খ , গদা এবং পদ্ম থাকে এবং বাকি একটি হাতে এই সুদর্শন চক্র থাকে। হিন্দু ধর্ম গ্রন্থ “পুরাণ” মতে অন্যায়- অশুভ শক্তির বিনাশ এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য বেদতা বিষ্ণু সুদর্শন চক্র ব্যবহার করেন। ত্রিশূল : ত্রিশূল হলো ভগবান শিবের একটি নিদর্শন। ভগবান শিবের ত্রিশূল তিনটি শক্তির প্রতীক । যেমন, জ্ঞান, ইচ্ছা ও সম্মতি । হিন্দু ধর্মমতে, শিবের ত্রিশূল প্রতিটি মানুষকে তার কর্ম অনুযায়ী কর্মফল প্রদান করে। হিন্দু ধর্মে ত্রিশূল শুভ শক্তির প্রতীক।

ঘট : ত্রিশূলের নিচে একটি লাল রংয়ের ঘট রয়েছে যা মঙ্গল কামনায় ব্যবহৃত হয়। ঘটের নিচে জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে বিশে^র সকল মানুষের কল্যানকামী দেবি “ জয় মা দুর্গা” লেখা রয়েছে। ওঁম অক্ষর : সুদর্শন চক্রের গোলাকারের মধ্যে ওঁম
অক্ষরটি চক্রের আড়াআড়ি দন্ডগুলোর মধ্যে স্থাপিত। ওঁম অক্ষরটি বিশে^র সকল মানুষের শান্তি এবং স্থিতির জন্য ব্যবহৃত হয়। হিন্দু ধর্ম মতে ওঁম হচ্ছে পবিত্রতার প্রতীক। এজন্য ধর্মীয়ভাবে প্রথমইে ওঁম শব্দটি উচ্চারন করা হয় যাতে বিশ্বের সকল প্রাণীর শান্তি হয় এবং সবকিছু পবিত্র থাকে।

এছাড়া চক্রের গোলাকার দন্ডের মধ্যে বাংলা এবং ইংরেজিতে “ বিশ্ব হিন্দু ফেডারেশন * World Hindu Federation “ সংক্ষেপিত WHF এবং বাংলায় ডব্লিউএইচএফ লেখা রয়েছে। এছাড়া সংগঠনটি স্থাপিত হওয়ার তারিখ ০১ জানুয়ারি ২০২২ খৃস্টাব্দ লিপিবদ্ধ রয়েছে। লোগোর সারাংশ এই যে, উপরোক্ত সব কিছুই শান্তি, পবিত্রতা এবং মঙ্গলজনক প্রতীক। এগুলো হিন্দু ধর্মে সাধারণত এককভাবে ব্যবহার করা হয়। কিন্তু আমরা এই প্রতীকগুলোকে একত্রিত করে একটি নতুন শিল্পকর্ম সৃষ্টি করেছি। ঠিক উপরোক্ত প্রতীক বা নিদর্শনগুলো একত্রিত করে বাংলাদেশ কিংবা বিশ্বের অন্য কোনো দেশের কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান এভাবে শিল্পকর্ম সৃষ্টি বা ব্যবহার করেছে বলে আমাদের জানা নেই। অনলাইন এবং অফলাইন দুই ভাবেই আমরা অনুসন্ধান করে দেখিছে। যতটুকু সম্ভব হয়েছে তাতে এধরনের লোগো আমরা খুঁজে পাইনি। আমাদের লোগোটি সম্পূর্ণ নতুন সৃষ্টি এবং মূল শিল্পকর্ম।

(ছ) সংগঠনের প্রতিষ্ঠার সন এবং তারিখ : ০১ জানুয়ারি ২০২২ খ্রিস্টাব্দ । ১৭ পৌষ ১৪২৮ বঙ্গাব্দ।

ধারা নং-০২
সংগঠনের কার্যালয়ঃ-
হোল্ডিং-২২/১, তোপখানা রোড, শিশুকল্যান পরিষদ ভবন, পঞ্চম তলা , ঢাকা-১০০০। কার্যনির্বাহী কমিটির অনুমোদন সাপেক্ষে লক্ষ্য উদ্দেশ্য সমূহ বাস্তবায়নের নিমিত্তে বিভিন্ন জেলা/উপজেলায় শাখা কমিটি ও অফিস খোলা যাবে এবং প্রধান কার্যালয় বা অন্যান্য অফিসের ঠিকানা প্রয়োজনবোধে স্থানান্তর করা যাবে।

ধারা নং-০৩
কর্ম-এলাকাঃ-
(ক) দেশের সকল প্রান্তে যেখানেই সনাতন ধর্মের লোক বসবাস করে সেখানেই এ সংগঠনের কর্ম এলাকা।
(খ) বিশ্বের যে কোনো দেশের সনাতন হিন্দুরা নিজ নিজ দেশে এই সংগঠনটির কার্যক্রম চালাতে পারবে।