Ambition

বিশ্ব হিন্দু ফেডারেশনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য

০১। সনাতন হিন্দু সম্প্রদায়ের সকল প্রকার ধর্মীয় উৎসব সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে উদ্যাপন, ধর্মীয় মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা, ধর্মীয় সংস্কৃতির বিকাশ সাধনে কাজ করা।

০২। বাংলাদেশ এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসবাসরত হিন্দু সম্প্রদায়ের অস্তিত্ব রক্ষা এবং রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, ধর্মীয় ও সামাজিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত করার জন্য প্রয়োজনীয় কার্যক্রম পরিচালনা করা।

০৩. বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারনকারী, স্বাধীনতার স্বপক্ষের ব্যক্তি, দল এবং গোষ্ঠির সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ থেকে বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়নে সহযোগির ভূমিকা পালন করা।

০৪. হিন্দুদের ধর্মীয় উৎসব পালন কিংবা হিন্দুদের যে কোনো প্রকারের বিপদ ও দুর্যোগকালীন সময়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতর এবং আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, বাহিনীর সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে সহযোগিতামূলক কাজ করা।

০৫. সারা বিশ্বে হিন্দু ধর্ম প্রচারে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহন।

০৬. হিন্দু ধর্মের বিরুদ্ধে সকল প্রকার অপপ্রচার বন্ধে প্রয়োজনীয় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ।

০৭. সনাতন হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে অন্য ধর্ম গ্রহণ কিংবা অপকৌশলে বা জোড়পূর্বক হিন্দুদের ধর্মান্তরিত প্রতিরোধ করতে সার্বিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

০৮. হিন্দু ধর্মীয় সকল জনকল্যানমূলক সংগঠন এবং মঠ, মন্দির, মিশনের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ থেকে হিন্দুদের জন্য কল্যানকর কাজ করা।

০৯. মানবাধিকার, সাংবিধানিক সম-অধিকার ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রেখে দেশ ও জাতির সেবায় আত্মনিয়োগ এবং সমাজ সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা।

১০. সনাতন হিন্দু ধর্মীয় পুস্তকাদি প্রকাশ, ধর্মীয় শিক্ষা দান, ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান সুন্দরভাবে পালনে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহন।

১১. হিন্দু ধর্মের বিভিন্ন প্রকার বর্ণ বৈষম্য বিলোপ এবং অসবর্নে বিয়ে ও আত্মীয়তার সম্পর্ক গড়ে তুলতে জনসচেতনতা সৃষ্টি।

১২. হিন্দু ধর্মে সম্পূর্ণভাবে যৌতুক প্রথার অবসান, অস্বচ্ছল পরিবারের কন্যাকে বিবাহে সাহায্য, শিক্ষা ও চিকিৎসায় সাহায্য-সহযোগিতা দান করা।

১৩. হিন্দু ধর্মের নারীদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে ধর্মান্তরিত করা এবং অপহরণ করার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ও সামাজিক পদক্ষেপ গ্রহনে সার্বিক সহযোগিতা করা।

১৪. হিন্দু ধর্মের অপ্রাপ্ত বয়স্ক মেয়েদের প্রলোভোন দেখিয়ে, যৌন নির্যাতন বা সতীত্ব নষ্ট করে বিয়ে করা কিংবা ধর্মান্তরিত করার উদ্দ্যেশে অপহরন করার বিরুদ্ধে প্রবল সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা এবং আইনগত পদক্ষেপ নিতে সার্বিক সহযোগিতা করা।

১৫. হিন্দু ধর্মের বেদখলকৃত সকল মঠ, মন্দিরের দেবোত্তর সম্পত্তি পুনরুদ্ধারে প্রচলিত আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ। সভা মিছিল মিটিং এবং সেমিনারের মাধ্যমে সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরকে বেদখলকৃত দেবোত্তর সম্পত্তি পুনরুদ্ধারে প্রেসার গ্রæপ হিসেবে কাজ করা।

১৬. সরকারি, বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে হিন্দু ধর্ম শিক্ষা কার্যকর হয়, তার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা।

১৭. সরকারি বেসরকারী যে কোনো হিন্দু ধর্মীয় দফতর/ ট্রাস্ট/ ফাউন্ডেশন / রয়েছে, যেখানে শুধুমাত্র হিন্দুজনগণ এবং হিন্দু ধর্মের স্বার্থ সংরক্ষিত/প্রতিপালিত হয়, সেখানে সব ধরনের বৈষম্য/অনিয়ম/দুর্নীতি দূর করতে জনসচেতনতা সৃষ্টি এবং প্রয়োজনীয় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ।

১৮. বাংলাদেশে যাতে সংখ্যালঘু কমিশন গঠিত হয় সেই লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহন।

১৯. বাংলাদেশে যাতে সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন তৈরি হয় সেই লক্ষ্যে জনমত সৃষ্টি এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন।

২০. হিন্দুদের জন্য একটি সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং হিন্দু সংসদ সদস্যদের মধ্য থেকে একজন সংখ্যালঘু মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী এবং উপমন্ত্রী পদ সৃষ্টি করার দাবীতে হিন্দু জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করা।

২১. বাংলাদেশে ধর্মীও এবং আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক অবস্থার প্রেক্ষপটে স্বামীর সম্পত্তিতে স্ত্রীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় হিন্দু ধর্মীয় আইন এবং হিন্দু ধর্মীয় রীতিনীতি মেনে নতুন আইন তৈরি করতে জনমত সৃষ্টিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ।

২২. হিন্দু বেকার যুবক-যুবতী ভাই-বোনদের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে ভোকেশনাল ট্রেনিং সেন্টার তৈরি, কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র তৈরি, অটোমোবাইল মেকানিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার তৈরি, ড্রাইভিং ট্রেনিং সেন্টার তৈরি, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প প্রশিক্ষণ কেন্দ্র তৈরি, ক্ষুদ্র দোকান ও ব্যবসা কেন্দ্র তৈরিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন।

২৩. চাকুরীর ক্ষেত্রে (সরকারী, আধা-সরকারী, সামরিক বাহিনী, আধা-সামরিক বাহিনী ও বেসরকারীসহ) সকল পর্যায়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য সংখ্যানুপাতিক কোটা ব্যবস্থা নিশ্চিৎ করা।

২৪. শিক্ষিত বেকারদের অস্থায়ী কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে কিন্ডার গার্টেন স্কুল, বৈদিক স্কুল, প্রি ক্যাডেট স্কুল প্রতিষ্ঠা করা।

২৫. হিন্দু সম্প্রদায়ের স্বার্থে/প্রয়োজনে জাতীয় বা আন্তর্জাতিক সম্মেলন, মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল, সংবাদ সম্মেলনসহ বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহণ।

২৬. সংস্কৃত শিক্ষা ব্যবস্থাকে (অদ্য মধ্য, উপাধিসহ উচ্চতর (ডিগ্রি) কে সাধারণ শিক্ষার সমমান করণ ও বৈদিক আলোকে একটি বৈদিক বিশ^বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা।

২৭. ধর্মীয় শিক্ষা ও মূল্যবোধের মাধ্যমে হিন্দু সম্প্রদায়কে সমাজের দুঃস্থ ও বিপর্যস্ত জনগণের মঙ্গল সাধনে উদ্দীপ্ত এবং সেবামূলক কাজে ব্রতী করা। সকল অসচ্ছল ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের সাধ্যমতো বৃত্তি প্রদান।

২৮. জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকলের সাথে সহযোগিতার মাধ্যমে সকলের প্রতি সহমর্মিতার পরিবেশ সৃষ্টি করা।

২৯. অভিভাবকহীন হিন্দু বোনদের কর্মসংস্থাপনের সুযোগ সৃষ্টি, আবাসন ব্যবস্থা তৈরি করা। অনাথ আশ্রম, বৃদ্ধা আশ্রম স্থাপনের মাধ্যমে অসহায় মানুষের সেবা করা।

৩০. জাতীয় দূর্যোগ ও মানব কল্যাণে সক্রিয় ভূমিকা পালন করা।

৩১ . সংখ্যালঘু নির্যাতন, মন্দির-প্রতিমা ভাংচুর রোধ, হিন্দু ধর্মীয় অপব্যাখ্যাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করা এবং সকল ক্ষেত্রে রাষ্ট্র বাদী হয়ে মামলা করবে সেই বিধান নিশ্চিৎ করা।

৩২. বিভিন্ন জাতি ও ধর্মীয় গোষ্ঠির মধ্যে সামাজিক ও ধর্মীয় ঐক্য এবং সম্প্রতি স্থাপনে সচেষ্ট হওয়া। ধর্মীয় ও সামাজিক সমস্যাদি চিহ্নিতকরণ এবং সমাধানে সচেষ্ট হওয়া।

৩৩. সনাতন ধর্মীয় মূল ভাবাদর্শ প্রচার, উদ্বুদ্ধ করা এবং সেপ্রেক্ষিতে সাপ্তাহিক/পাক্ষিক/মাসিক/সাময়িক পত্রিকা ও স্মরণিকা ইত্যাদি প্রকাশের ব্যবস্থা করা।

৩৪. ঐতিহাসিক ধর্মীয় নিদর্শন/কীর্তিসমূহ সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া।

৩৫. ভগবান শ্রী রাম চন্দ্রের বনবাসের সময় পার্বত্য চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডু এবং কক্সবাজারে পঞ্চবটি বনে স্মৃতি ধারনে মন্দির ও ধর্মীয় স্থাপনাদি প্রতিষ্ঠা করা এবং ধর্মী কার্যক্রম পরিচালনা করা।

৩৬. ধর্মীয় বিপথগামীদের সুপথে আনয়ন এবং পুনর্বাসনের সার্বিক ব্যবস্থা করা।

৩৭. জাতীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে সরকারী/ বেসরকারী কর্মসূচী অংশগ্রহণপূর্বক সকল পর্যায়ে অভিজ্ঞতা বিনিময়ের জন্য ধর্মীয় সভা-সমিতি, সেমিনার সিম্পোজিয়াম ইত্যাদি আয়োজন করা এবং সংগঠনের সদস্যদের অংশগ্রহণে উৎসাহিত করা।

৩৮. সরকারী ও বেসরকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান সমূহের সাথে সমন্বয় এবং সহযোগিতার মাধ্যমে আন্তঃযোগাযোগ ও সম্পর্ক উন্নয়নকরণ।

৩৯. জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা’র জন্ম দিন ১৫ আগষ্ট জাতীয় শোক দিবস, স্বাধীনতা ও বিজয় দিবস, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসসহ সকল জাতীয় দিবস পালন। মহাপুরুষ বরেন্য রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, শিল্পী, কবি সাহিত্যিকদের জন্ম ও মৃত্যু দিবস উদ্যাপন।

৪০. প্রতিবন্ধী নারী, পুরুষ ও শিশুদের জন্য উন্নয়ন কর্মসূচী গ্রহণ তাদেরকে মর্যাদার সাথে জীবন-যাপনের আইন সঙ্গত অধিকার সংরক্ষণে সহায়তা প্রদান।

৪১. অসহায় ও নির্যাতিত হিন্দু-ভাই বোনদের আইন সহায়তা প্রদানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন।

৪২. মাদক এবং সন্ত্রাস বিরোধী জনমত সৃষ্টিতে কাজ করা।

৪৩. বিশ^ হিন্দু ফেডারেশন অন্যান্য হিন্দু সংগঠনগুলোর মধ্যে সমন্বয় ও ঐক্য সাধন করে একটি হিন্দু ধর্মীয় স্বার্থ রক্ষামূলক সমন্বয় পরিষদ গঠন করবে। সমন্বয় পরিষদের সদস্য সংগঠনগুলো এক সঙ্গে সভা, সমাবেশ, সংবাদ সম্মেলন এবং মিছিল মিটিং করে হিন্দু কল্যানকর দাবি আদায় করার কার্যক্রম পরিচালনা করবে।

৪৪. এ ছাড়া গঠনতন্ত্রে অনুদিত না থাকলেও হিন্দু ধর্মীয় স্বার্থ এবং মানবকল্যানে সময়োপযোগী প্রয়োজনীয় কার্যক্রম পরিচালনা করা।